সাব্বাস মেয়ে: একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এই রকম মেয়ের উপস্হিতি কল্পনার অতীত!
মেয়েটি কঠিন পর্দা করে । এমন কঠিন পর্দা এই জামানার কোন সুন্দরী রমণী করে কিনা বলা মুশকিল । মেয়েটির হাত পা পর্যন্ত দেখা যায় না । শুধু চোখ দুটো শুক তারার মতো জ্বল জ্বল করে।
তার মাত্র দুই বছর হয় বিয়ে হয়েছে । বিয়ের পনেরো দিনের মাথায় স্বামী তার কর্মস্থল কুয়েতে চলে যায়। স্বামীর নিজেস্ব ব্যবসা সেখানে। যার দরুন ব্যবসা ফেলে স্ত্রীর কাছেও আসতে পারছে না। তবে স্ত্রীকে সেখানে নেওয়ার জন্য জোর তৎপর চালাচ্ছে কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
যে মেয়ে কোন দিন মাদ্রাসা আর বাড়ি, এই গন্ডির বাহিরে পা রাখেনি, সে মেয়ে আজ পাসপোর্ট অফিস, কাজি অফিস কত জায়গায়ই না যাচ্ছে। যদিও সব জায়গায়তেই এই কঠিন পর্দার জন্য কিছুটা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তারপরেও সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে বহু প্রতিক্ষিত সফর স্বামীর কাছে সে রওনা দিয়েছে। কিন্তু তার জন্য যে এক কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে সে নিজেও জানে না।
কুয়েতের ফ্লাইট বিকেল 04:15 মিনিটে তবুও কিছুটা আগেই রওনা দিয়েছে সে, কিন্তু পথে ট্রাফিক জ্যাম থাকায় কিছুটা দেরি হয়ে গেছে, সাথে তার বৃদ্ধ বাবা এগিয়ে দেওয়ার জন্য এসেছে।
বিপত্তিটা তখনই বাধলো যখন এমিগ্রেশন অফিসার তার মুখ দেখতে চাইলেন কিন্তু পরহেজগার মেয়েটি কিছুতেই নেকাব খুলবে না। কিন্তু তার চেহারার সাথে পাসপোর্টের মিল আছে কি না এটা না দেখলে তো অফিসার কিছুতেই এমিগ্রেশন পার হতে দেবে না, মেয়েটি অফিসারকে অনুরোধ করলো যে, কোন মহিলা অফিসার দিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার জন্য কিন্তু সেই সময়টিতে কোন মহিলা অফিসার ডিউটিরত ছিল না।
অফিসার মেয়েটিকে বারবার বলছে: দেখুন আমি আপনার ভাইয়ের মতো, মাত্র একবার আপনার চেহারা দেখলে তেমন কিছুই হবে না। ভাইয়ের মতো কিন্তু ভাই তো নয়। প্লিজ কোন মহিলা বা মেয়েকে ডাকুন। না থাকলে কোথা থেকে ডাকব। একজন ছিল সে এখন ডিউটিতে নেই।
বারবার মেয়েটির নাম ধরে মাইকে এনাউন্স করা হচ্ছে বিমানে উঠার জন্য কিন্তু একটিমাত্র কারণে মেয়েটির এমিগ্রেশন পার হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মেয়েটির প্রতিবার এনাউন্সের সময় চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছিলো কিন্তু সেটাও পারছিলো না। বহু প্রতিক্ষার পর স্বামীর সান্নিধ্য পাওয়ার যে লালিত স্বপ্ন সেটা প্রতি মিনিটে ধুলিশ্চাৎ হয়ে যাচ্ছিল।
এবার এমিগ্রেশনের বড় অফিসার তার সামনে এসে দাঁড়ালো। কি ব্যাপার আপনি যাচ্ছেন না কেন বারবার এনাউন্স হচ্ছে শুনতে পাচ্ছেন না? আমি তো যেতে চাই কিন্তু আপনারাই তো ঢুকতে দিচ্ছেন না। দেখুন প্রতিটি কাজেরই একটা সিস্টেম আছে। তার বাইরে তো আর আমরা যেতে পারিনা।
একবার চেহারা দেখালে তো আর মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। মহাভারত অশুদ্ধ হবে না, কিন্তু অশুদ্ধ হবে আমার পরকাল, অশুদ্ধ হবে আমার আমলনামা, অশুদ্ধ হবে আমার ঈমান। স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য হয়তো ব্যাকুলতা আছে কিন্তু সেই ব্যাকুলতার জন্য তো আমি আমার সারা জীবনের রক্ষিত সম্পদ নষ্ট করতে পারিনা; আর এই জটিলতার জন্য হয়তো এই বিমানটি আমি ফেল করব, কিন্তু আমি জানি আখেরাতে বিমান আমার জন্য ঠিকই লেন্ড করা থাকবে।
অফিসার অবাক (!) দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এই রকম মেয়ের উপস্হিতি কল্পনার অতীত। এই মেয়েগুলোর জন্যই হয়তো পৃথিবী এখনো ধ্বংস হয়নি।
ঠিক আছে, আপনি আসুন আমার সাথে আপনাকে আমি এমিগ্রেশন পার করে দিচ্ছি। পাসপোর্টের সাথে চেহারা না মিলিয়ে কোন মেয়ে আজ এমিগ্রেশন পার হচ্ছে।
মেয়েটি চকচকে ফ্লোরের পথ ধরে খুব জোরে হাঁটছে সে জানে না বিমান তার জন্য এখনও অপেক্ষা করছে কি না।
না, অবশেষে মেয়েটি যেতে পেরেছে। ঈমানের চরম পরীক্ষায় সে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার জন্য অপেক্ষা করছে এক মহা আনন্দের সময়। যে সবর এবং ধৈর্য্য ধরতে জানে তার জন্য আছে মহা মূল্যবান পুরস্কার।
(সংগ্রহকারী যার কাছে থেকে সংগ্রহ করেছে তার ফেবু আইডি উল্লেখ করেনি।)
নোটিশ: আপনি কি ব্লগ কিংবা ফেসবুকে ইসলাম এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে আগ্রহী? তাহলে আপনার লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে।বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। ধন্যবাদ Fb.com/MaqamaeIbrahim
Copyright©2017: IslaameraloII Design By:F.A.CREATIVE FIRM